তুমি কেন এই আন্দোলনে? তোমার তো বয়স নয়...'


বয়স খুব বেশি হলে আট থেকে দশের মধ্যে। পরন একটা গোলাপি রঙের ফ্রক। মিষ্টি মুখখানা, চোখ দুটো তেমনই উজ্জ্বল, দেখেই আটকে গিয়েছিল ক্যামেরা। আরে! কাতারে কাতারে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বসে সুর চড়াচ্ছে এই বাচ্চা মেয়েটা! প্রশ্নটা অত্যন্ত সমীচীন। তাই TV9 বাংলার প্রতিনিধি সৌরভ দত্ত সোজা সাপটা প্রশ্নটা করেই ফেলেন তাকে। ‘তুমি কেন এই আন্দোলনে? তোমার তো বয়স নয়…’ বুমটা সবেমাত্র তার মুখের কাছে গিয়েছে। না, যতটা মনে হয়েছিল, তার থেকেও আরও অনেক অনেক বেশি স্মার্ট, স্পষ্টবাদী এই মেয়ে। এই বয়সেই কিনা বুঝে গিয়েছে, কেন সে আন্দোলনে এসেছে, কীসের লড়াই, তার এখানে কয়েকশো ‘আঙ্কেল’, ‘আন্টি’দের সঙ্গে বসার থাকার কারণ কী। পুরোটাই তার কাছে অত্যন্ত জলের মতো স্পষ্ট। ক্যামেরা, বুম দেখে এক ফোঁটাও ঘাবড়ায়নি সে। একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়েই যা বলল, তা বলতে ঢোক গিলতে হয় আচ্ছে আচ্ছে বড়দেরও!

মেয়েটা বলল, “আমার বাবা চাকরি পায়নি। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে ঘোষণা করেছিল প্রাইমারি টেট পাশ ২০ হাজার প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও ১২ হাজার টেট পাশ ট্রেনিদের চাকরি দিয়েছে। এখনও ৮ হাজার নট ইনক্লুডেড রয়েছে। দিদি তার নিজের কথা মতো তাদের চাকরি দিক। দিদি তার প্রতিশ্রুতি রাখুক। তাই আমি আন্দোলন করছি। আমার বাবা-কাকু-আঙ্কেল-আন্টিদের চাকরি দিয়ে দেয়।”

‘টেট’, ‘নট ইনক্লুডেড’ এই শব্দগুলো এই বয়সে যতটা সাবলীলভাবে উচ্চারণ করেছে সে, তা বাহবা দেওয়ার মতো। এই শব্দগুলোর আক্ষরিক অর্থ হয়তো বোঝার বয়স হয়নি তার। কিন্তু বাবার লড়াই যে কীসের জন্য বা এই শব্দগুলোর অর্থ যে কতটা গহিন, তা আঁচ করতে পেরেছে সে। কথাগুলো যখন বলছিল, তখন কেবল আমাদের প্রতিনিধিই নন, বাকি আন্দোলনকারীরাও তার দিকে তাকিয়ে। কতটা সাহসিকতার সঙ্গে বাবার লড়াইয়ের কারণ ব্যাখ্যা করল বাচ্চা মেয়েটা!

তবে কি তাকে কেউ জোর করে এখানে এনেছে? সে প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছে খুদে। জানিয়েছে, নিজে থেকেই বাবার আন্দোলনে সামিল হয়েছে সে।

একবার শুনেই নিন কী বলল খুদে…


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours