সূত্রের খবর, একটি বিশেষ ধরনের চিরকুট ব্যবহার করত গরু কারবারিরা। সেই চিরকুটে উল্লেখ থাকত, কোন পথে গরু নিয়ে যাওয়া হবে, কার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই সব কিছু। সঙ্গে ব্যবহার করা হত স্ট্যাম্পও।
ইলামবাজার : বীরভূমের ইলামবাজারে সুখবাজারের মাঠে প্রতি শনিবার বসে গরুর হাট। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই গরুপাচারকাণ্ডের তদন্তে নামার পর থেকেই এই হাট কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের স্ক্যানারে। সূত্রের খবর, সুখবাজারের এই হাটের আড়ালেই চলত গরুপাচারের রমরমা কারবার। এখান থেকে গরু চলে যেত মুর্শিদাবাদে। তারপর সেখান থেকে পৌঁছে যেতে বাংলাদেশ সীমান্তে। কিন্তু এই গরুগুলিকে কীভাবে চিহ্নিত করা হত? চোরা কারবারিরা কীভাবে বুঝত, কোন গরুটি পাচারের গরু? কারণ, হাটে তো আরও অনেক গরু বিক্রি হয়। সূত্রের খবর, একটি বিশেষ ধরনের চিরকুট ব্যবহার করত গরু কারবারিরা। সেই চিরকুটে উল্লেখ থাকত, কোন পথে গরু নিয়ে যাওয়া হবে, কার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই সব কিছু। সঙ্গে ব্যবহার করা হত স্ট্যাম্পও। গরুর গায়ে সেই স্টাম্পের ছাপ মারা থাকত। এই চিরকুট এবং স্টাম্প দেখেই চিহ্নিত করা হত পাচারের গরুগুলিকে।

ব্যবহার করা হত বিশেষ ‘বিএস’ স্ট্যাম্প
সিবিআই গোয়েন্দারা গরুপাচারকাণ্ডের তদন্তে নামার পর থেকেই বেশ কিছু তথ্য উঠে আসতে শুরু করেছে। পেঁয়াজের খোসার মতো পরতে পরতে বেরিয়ে আসছে নতুন তথ্য। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, যে বিশেষ স্ট্যাম্প পাচারকারীরা ব্যবহার করত, সেটিতে লেখা থাকত ‘বিএস’। কালো কালিতে ছাপা থাকত এই স্ট্যাম্প। কিন্তু কী এই ‘বিএস’-এর বিশেষত্ব?

জানা গিয়েছে, ‘বিএস’ শব্দটির অর্থ বিশু শেখ। কারণ, গরুপাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত এনামূল হকের যে গরু সিন্ডিকেট ছিল, সেখানে এনামূলের নাম ছিল বিশু শেখ। সেই থেকেই বিএস স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হত।

এনামূলের এই গরু সিন্ডিকেট বেশ শক্তিশালী ছিল। হাট থেকে গরু মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী গ্রাম মূলত ওমরপুর এবং জঙ্গিপুর পৌঁছে যেত। তারপর সেখান থেকে ভাগাভাগি হত, কোন সীমান্ত দিয়ে কত গরু যাবে। সেখানে এই বিশু শেখ সিন্ডিকেটের ছাপানো চিরকুট ব্যবহার করা হত বলে খবর। সেই চিরকুটে উল্লেখ থাকত কত গরু যাচ্ছে, কার মাধ্যমে যাচ্ছে সেই সব উল্লেখ থাকত বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।

সিবিআই সূত্রে খবর এনামূলের সঙ্গে অতীতে একসঙ্গে কাজ করত পিন্টু। সেই পিন্টু বর্তমানে মালয়েশিয়াতে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগে পিন্টু ও এনামূল একসঙ্গে কাজ করত। পরবর্তী সময়ে এনামূলের সঙ্গে সমস্যার কারণে, পালিয়ে যায় পিন্টু। সিবিআই সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এই পিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছেন। পিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সংক্রান্ত আরও তথ্য পেতে পারেন গোয়েন্দারা।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours