'কাবুলের বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে আমাদের দূত ও দূতাবাসের অপর কর্মীদের ফিরিয়ে আনা হবে।' মঙ্গলবার সকালে টুইট করে এমনই জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, বায়ুসেনার একটি বিশেষ বিমানে দূতাবাসের কর্মীরা ফিরে আসবেন। আইটিবিপির যে কর্মীরা দূতাবাসে রক্ষীর কাজ করেন, তাঁদেরও ফিরিয়ে আনা হবে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভারতীয় দূতাবাস খালি করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কেউ বিপদে পড়লে যাতে ভারত সরকার সাহায্য করতে পারে, সেজন্য একটি হেল্পলাইনের নম্বর দেওয়া হয়েছে। নম্বরটি হল ৯১৯৭১৭৭৮৫৩৭৯। এছাড়া একটি ই-মেল অ্যাড্রেসও দেওয়া হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর টুইট করে বলেন, তিনি আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের মতে, কাবুল বিমানবন্দর চালু রাখাই এখন প্রধান কাজ। গত রবিবার থেকেই কাবুল শহরের আশপাশ অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। একমাত্র বিমানে চড়ে পালানো যাচ্ছে কাবুল থেকে। উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, সোমবার সেখানে ভিড় করেছেন বহু মানুষ। যত সময় যাচ্ছে, বিমান বন্দরে ভিড় বাড়ছে। সোমবার সেখানে পাঁচজন মারা গিয়েছেন। তাঁরা মার্কিন সেনার গুলিতে মারা গিয়েছেন না পদপিষ্ট হয়েছেন জানা যায়নি। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, এয়ারপোর্টে যাওয়ার রাস্তায় ব্যাপক যানজট হয়েছে। সোমবার দুই ব্যক্তি প্লেন থেকে পড়ে মারা গিয়েছেন। সোমবার কয়েক ডজন দেশ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, যারা আফগানিস্তানে ক্ষমতায় এসেছে, তারা যেন বিদেশিদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে দেয়। সীমান্ত যেন খোলা থাকে। আল জাজিরা টিভিতে দেখা গিয়েছে, কাবুলে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঘুরে বেড়াচ্ছে সশস্ত্র তালিবান জঙ্গিরা। মার্কিন নাগরিকরা বিমানে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। সোমবার পেন্টাগন ও আমেরিকার বিদেশ দফতর থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যেক মার্কিন নাগরিককে ফিরিয়ে আনা হবে। তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ৬ হাজার মার্কিন সেনা। ২০০১ সালে ন্যাটো বাহিনীর আক্রমণে তালিবান কাবুল থেকে পালাতে বাধ্য হয়। তখন টিভিতে দেখা গিয়েছিল, তালিবানের হাত থেকে রেহাই পেয়ে অনেক আফগান আনন্দ করছেন। কিন্তু বাস্তবে কখনই তালিবানকে পুরোপুরি পরাস্ত করতে পারেনি আমেরিকা। কাবুল এবং অন্যান্য বড় শহর তালিবানের হাতছাড়া হয়েছিল ঠিকই কিন্তু আফগানিস্তানের দক্ষিণের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এবং উত্তরে হেলমন্দ, কান্দাহার, উরুজগান ও জাবুল প্রদেশে ছিল তাদের শক্ত ঘাঁটি। সেখানে তারা প্রতি মাসে মার্কিন বাহিনীর ওপরে হামলা চালাত।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours