দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার ৬ টি প্রাচীন ও বেহাল সেতু ভেঙে ফেলার সুপারিশ জানালো কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ সংস্থা, পূর্ত দফতরকে। দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুগুলো বেহাল অবস্থা হয়ে দাড়িয়েছে। এইসব সেতুর বিকল্প এখনও তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। এই সেতুগুলো পরীক্ষা করে রাজ্যের কাছে রাইটসের সুপারিশ যে  এই সেতুগুলোর বেহাল অবস্থা থাকার জন্য যেকোনো দিন একটা বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।

অন্যদিকে, কলকাতার আরেক সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু হল। যাদবপুর প্রিন্স আনোয়ার শাহ ও গাঙ্গুলীবাগান কানেক্টর হিসেবে থাকা জীবনানন্দ সেতুর ভার বহনের পরীক্ষা শুরু করা হল। মাঝেরহাট সেতু দূর্ঘটনার পরে রাজ্যের একাধিক সেতুর হাল জানতে একাধিক বিশেষজ্ঞ সংস্থার সাহায্য নিচ্ছে রাজ্য সরকার। পূর্ত দফতরের হাতে থাকা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ৩৬ সেতু এবং রেল ওভার ব্রিজের সংষ্কারের   আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ করছে কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস। ইতিমধ্যেই তারা যে সমস্ত সেতু পরীক্ষা করেছে তাতে তারা বলছে তিন জেলায় ছড়িয়ে থাকা ৬ সেতু ভেঙে ফেলা হোক। এই ৬ সেতু হল, মূর্শিদাবাদের রণগ্রাম সেতু ও সুখদেবমতী সেতু। নদীয়ার মুরুটিয়ার সেতু। দক্ষিণ ২৪ পরগণার উত্তর ভাগ সেতু, সূর্যপুর সেতু ও লালপুল সেতু।


এই সেতুগুলির অবস্থান, রণগ্রাম সেতু - কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়ক দ্বারকা নদীর ওপরে এই সেতু। ১৯৩৫ সালে তৈরি হয় এই সেতু। ২০১৮ সালে সাড়ে ১২ মিটার ফাটল ধরা পড়ে। সেতুর মাঝামাঝি জায়গা জুড়ে চিড় স্পষ্ট। বীরভূম ও বর্ধমান জেলার মানুষও এই সেতুর ওপর নির্ভর করে। লালপুল সেতু, উস্থী - ১০৫ বছর বয়স এই সেতুর। ১০ বছর ধরে সেতু প্রায় অকেজো। উস্থী থেকে দেউলা যাওয়ার একমাত্র সেতু। হুগলি নদীর শাখা খালের ওপরে এই সেতু আছে। এখানে যদিও নতুন সেতু হবে। সূর্যপুর সেতু - বারুইপুর-জয়নগর রোডের ওপরে রয়েছে এই সেতু। গত বছরও ফাটল ধরা পড়ে। লোহার পাত দিয়ে মেরামত করা হয়। ভার বহন ক্ষমতা নেই বললেই চলে। উত্তরভাগ সেতু - বারুইপুর-ক্যানিং রোডের ওপরে এই সেতু। অবস্থা খারাপ।

 একাধিক জায়গায় ফাটল আছে। এছাড়া মুরুটিয়া ও সুখদেবমতী সেতুর অবস্থাও ভীষণ জীর্ণ। রাইটসের সুপারিশ অনুযায়ী, এই সব সেতু যখন তৈরি করা হয়েছিল, তখন যে গাড়ির ভার বা চাপ সহ্য করার ক্ষমতা ছিল, তা এখন আর নেই। কারণ, এখন গাড়ির চাপ বেড়েছে। এখন সেতুর নকশা করতে গেলে আরও বেশি ভার বহন করতে পারবে এমন ভাবেই করতে হবে। যেহেতু দীর্ঘদিন এই সেতুগুলির সংস্কার করা হয়নি ফলে আরও খারাপ হয়ে পড়েছে এই সেতুগুলি। তাই রাইটসের সুপারিশ ভেঙে ফেলা হোক এই ৬ সেতু। নতুন সেতু তৈরি করা হোক।

এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু হল জীবনানন্দ সেতুতে। ভার বহনের পরীক্ষা করা হবে সেতুর। আগামীকাল অবধি চলবে এই পরীক্ষা। ৩০টন ওজনের চারটি ডাম্পার রেখে ২৪ ঘন্টা ধরে চলবে এই পরীক্ষা। এক্ষেত্রে দেখা হবে এই সেতু ভারের কারণে কতটা অংশ নেমেছে। এর পর ডাম্পার সরানোর পরে ফের দেখা হবে সেতুর অবস্থান। এই সব মাপ বোঝার জন্যে, সেতুর নীচে বসানো হয়েছে একাধিক সেন্সর ও মিটার।সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে কে এম ডি এ। রাজ্যের নগরায়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, সেতু বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী শুরু হয়েছে এই  সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours