বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীদের বক্তব্য, বগুলার নামের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। তাই কোনওভাবেই হাসপাতালের নাম বদল করা যাবে না। প্রয়োজন হলে যাদবপুরের দুর্ঘটনাস্থলের নাম বদলানো হোক, দাবি এলাকাবাসীদের।


বগুলা: যাদবপুরের মৃত ছাত্রের মাকে সরকারি চাকরি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নামও মৃত পড়ুয়ার নামে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সরকারের তরফে। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চাকরিতে যোগ দিতে যান মৃত পড়ুয়ার মা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামীও। আর সেখানেই এলাকাবাসীদের তুমুল বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হয় যাদবপুরের মৃত পড়ুয়ার বাবা-মাকে। পড়ুয়ার মৃত্যুতে এলাকাবাসীরা প্রত্যেকেই শোকস্তব্ধ। দোষীদের শাস্তি চাইছেন। বিচার চাইছেন। কিন্তু কোনওভাবেই বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নাম পরিবর্তন চাইছেন না এলাকাবাসীরা। কর্তৃপক্ষের তরফে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হাসপাতালের নতুন নামও লেখা হয়ে গিয়েছিল। এদিন বিক্ষোভরত এলাকাবাসীরা সেখানে হাসপাতালের নামের থেকে মৃত পড়ুয়ার নাম মুছে দেন। সাজানো ফুলের মালাও ছিঁড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ।


বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীদের বক্তব্য, বগুলার নামের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। তাই কোনওভাবেই হাসপাতালের নাম বদল করা যাবে না। প্রয়োজন হলে যাদবপুরের দুর্ঘটনাস্থলের নাম বদলানো হোক, দাবি এলাকাবাসীদের। কেন মৃত পড়ুয়ার বাবা-মা কেউ হাসপাতালের নাম বদলের আপত্তি করলেন না, সেই নিয়েই ক্ষোভ এলাকাবাসীদের একাংশের। আর এই বিক্ষোভের মধ্যেই কেউ একজন সুর চড়ান, ‘বিক্রি হয়ে গিয়েছেন’ মৃত পড়ুয়ার বাবা-মা। তাতে পরিস্থিতি আরও তপ্ত হয়ে ওঠে। সদ্য সন্তানহারা দম্পতি এমন অভিযোগ শুনে নিজেদের ঠিক রাখতে পারেন না। হাসপাতাল চত্বরেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন মৃত পড়ুয়ার মা।

‘বিক্রি হয়ে যাওয়ার’ অভিযোগ শুনে বেজায় বিরক্ত পড়ুয়ার বাবাও। এই ধরনের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। বলছেন, ‘এত নোংরা মানসিকতা। এত ইতর-বর্বর মানসিকতা। আমি নিজে বগুলাবাসীর তরফে যাদবপুর থানায় বলেছিলাম, বগুলাবাসী যাদবপুরে যাবে, কারও গায়ে যেন হাত না লাগে। আমি সবাইকে বলেছিলাম, বগুলা থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের যেন কোনও সমস্যা না হয়। সন্তান হারিয়ে আমাদের পাগলের মতো অবস্থা। উনি কী করে এমন কথা বললেন!’ তিনি আরও জানিয়েছেন, বগুলা হাসপাতালের নাম বদলের বিষয়টি পুরোপুরি সরকারি সিদ্ধান্ত, এই বিষয়ে তাঁদের কিছু বলার নেই।


ঘটনার প্রসঙ্গে বিএমওএইচ বীরেন মজুমদার জানাচ্ছেন, ‘এলাকার মানুষজন আজ জড়ো হয়েছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকে পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রতি সমব্যথী, কিন্তু তাঁরা কোনওভাবেই হাসপাতালের নামের পরিবর্তন করতে রাজি নন। বগুলা হাসপাতালের নাম একটি জায়গার নামে। তাঁদের বক্তব্য, এটি আত্মার সঙ্গে জড়িত, এটির নাম বদল করতে তাঁরা রাজি নন। এলাকাবাসীরা চাইছেন, বগুলা হাসপাতালের নাম পরিবর্তন না করে এটিকে একশো শয্যার করা হোক।’
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours