১৯৭৩ সালে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন সিগারেটের প্যাকেটে লিখে পাঠিয়ে দেওয়া হত রাইটার্স বিল্ডিংয়ে।” কলেজ স্ট্রিটের মঞ্চে উঠে বললেন বিমান।


বামফ্রন্টের আমলে চিরকুট দিয়ে কখনও চাকরি হয়নি।” কলেজ স্ট্রিটে (College Street) এসএফআইয়ের (SFI) সমাবেশ মঞ্চে উঠতে শুরুতেই এ কথা বলতে শোনা গেল বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে (Biman Basu)। তবে বিমানের আগেই বক্তব্য সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানাতে দেখা গিয়ে এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতা ধরকে (Dipsita Dhar)। “যদি রাস্তাগুলি আমাদের থাকে তবে আগামীদিনে লোকসভা, বিধানসভা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোদ্দতলা নব্বান্নও আমাদের হবে।” এদিন ঠিক এ ভাষাতেই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুর চড়াতে গিয়ে মমতার সরকারকে এ হাত নেন দীপ্সিতা। 
রাজ্যে চাকরি দুর্নীতির কথা বলতে গিয়ে বিমানের কথায় উঠে আসে রাজ্য়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের কথা। বিমানের দাবি, “১৯৭৩ সালে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন সিগারেটের প্যাকেটে লিখে পাঠিয়ে দেওয়া হত রাইটার্স বিল্ডিংয়ে।” এদিন মঞ্চে উঠে বিমান বলেন, “নীতি, নৈতিকতা, সভ্যতা, সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা, সুস্থ সংস্কৃতি সব জলাঞ্জলি গিয়েছে। ২০১১ সালের পর একের পর এক যেভাবে নিয়োগ হচ্ছে তা দেখাই যাচ্ছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিগারেটের প্যাকেটে নাকি লিখে চাকরি হত এক সময়। হ্যাঁ হত। তার জন্য ইতিহাস-ভূগোল জানতে হবে। ১৯৭৩ সালে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন সিগারেটের প্যাকেটে লিখে পাঠিয়ে দেওয়া হত রাইটার্স বিল্ডিংয়ে। আর তাঁদের সবাইকে ঢোকাতে হত। এমনও হয়েছিল রাইটার্সে কোন দফতরে চাকরি, কোন স্কেলে তাও ঠিক হয়ে যেত। কিন্তু, বামফ্রন্টের আমলে চিরকুট দিয়ে কখনও চাকরি হয়নি।” 

তবে সিদ্ধার্থের তুলোধনা করেও দুর্নীতি প্রসঙ্গে বামেদের পাশাপাশি কংগ্রেসকেও এদিন কার্যত ক্নিনচিট দিতে দেখা যায় বিমানকে। এদিকে এই কংগ্রেসের হাত ধরেই শেষ দুই বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছিল বামেদের। তবে সে সবে বিশেষ পাত্তা না দিয়ে এদিন বিমান বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এর আগে বামফ্রন্ট সরকার ছিল, কংগ্রেস সরকার ছিল কখনও তো এ ঘটনা আগে ঘটেনি। এ ধরনের অবস্থা তৈরি করার জন্য দায়ী কে? তৃণমূল কংগ্রেস আবার কে!”
তবে এদিন নাম না করে পার্থ-অনুব্রতর বিরুদ্ধেও তোপ দাগতে দেখা যায় বিমানকে। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই মমতার সরকারের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা আক্রমণ শানিয়ে বিমান বলেন, “আমি তো এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ। কিন্তু, এত টাকার পাহাড় কখনও দেখিনি। এগুলো তো বানানো নয়। সত্য ঘটনা। এই ঘটনা ঘটল কী করে? দিনের পর দিন লোয়ার প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে নিয়োগ পরীক্ষায় যাঁরা কৃতকার্য হয়েছেন, মেধা তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, চাকরি পাননি। তাঁরা রোদে পুড়ছেন, জলে ভিজছেন। এই অবস্থা হবে কেন? এ কথা সত্য তৃণমূলের সবাই চোর নয়। ওদের পদাধিকারী, ধরুন যাঁর মাথায় অক্সিজেনের অভাব আছে, তিনি একটা জেলার তৃণমূলের সভাপতি। তাঁর আবার আপ্ত সহায়ক আছে। যা অবস্থা এখন আর কেউ মেয়ের নাম সুকন্যা রাখবে না। সুকন্যাকে যদি বাবা কুকন্যা তৈরি করে তাহলে তো সর্বনাশ। শোনা যাচ্ছে সে নাকি পরীক্ষা দেয়নি। কিন্তু শিক্ষকের তালিকায় তাঁর নাম আছে।”  
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours