দেশে করোনা (COVID 19) সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) দেশে কোভিড পরীক্ষার জন্য এক সংশোধিত এবং নতুন উপদেশাবলী নিয়ে এসেছে। নতুন উপদেশাবলীতে বলা হয়েছে, যাঁরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসবেন, তাঁদের বয়স বা কোমর্বিডিটির ভিত্তিতে যদি তেমন ঝুঁকি না থাকে, তাহলে তাঁদের করোনা পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই।

সোমবার আইসিএমআরের তরফে করোনা পরীক্ষা সংক্রান্ত যে উপদেশাবলী জারি করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে যাঁদের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তাঁদের দ্রুত শনাক্ত করে আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে বয়স্কদের (৬০ বছরের বেশি বয়সি) এবং এবং যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদেরও দ্রুত চিকিত্‍সা ব্যবস্থা চালু করার জন্য কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে।

নতুন জারি করা উপদেশাবলীতে আইসিএমআর উল্লেখ করে দিয়েছে, কাদের ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষা করা উচিত এবং কখন এটি আসলে প্রয়োজন। এর পাশাপাশি কাদের কোভিড পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়ার প্রয়োজন বেই সে সম্পর্কেও বিশদ নির্দেশিকা জারি করেছে আইসিএমআর।

সাধারণ গোষ্ঠী পর্যায়ে করোনা পরীক্ষা:

– যাঁদের শরীরে করোনার উপসর্গ (কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা, স্বাদ অথবা গন্ধ, শ্বাসকষ্ট অথবা শ্বাসকষ্টের অন্যান্য উপসর্গ) রয়েছে।

– করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন এমন ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর মানুষ (ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছেন ৬০ বছরের বেশি বয়সি নাগরিকরা এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুস বা কিডনি রোগ, ম্যালিগন্যান্সি, স্থূলতা ইত্যাদি কোমর্বিডিটি রয়েছে)।

– যাঁরা যাঁরা বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন (সংশ্লিষ্ট দেশের নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী)।

– নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুযায়ী বিদেশ ফেরত যাত্রীরা, যাঁরা এ দেশের বিমানবন্দর / সমুদ্রবন্দর/ বন্দরগুলিতে আসছেন।

হাসপাতালের ক্ষেত্রে কাদের করোনা পরীক্ষা:

– পরীক্ষার অভাবে সার্জারি কিংবা ডেলিভারি সহ অন্যান্য ইমার্জেন্সি ক্ষেত্রে দেরি করা উচিত নয়।

– পরীক্ষার অভাবের জন্য রোগীদের অন্য জায়গায় রেফার করা উচিত নয়।

– উপসর্গবিহীন রোগীদের অস্ত্রোপচার বা অন্যান্য গুরুতর ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষা করানোর দরকার নেই। প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতাল ভর্তি গর্ভবতী মহিলাদেরও যদি কোনও উপসর্গ না দেখা যায়, তাহলে করোনা পরীক্ষা করানোর দরকার নেই।

যাদের করোনা পরীক্ষার করানোর প্রয়োজন নেই:

– গোষ্ঠী পর্যায়ে যাঁদের শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ নেই

– কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা কারও বয়স বা কোমর্বিডিটি জনিত যদি কোনও ঝুঁকি না থাকে, তাহলে টেস্ট করানোর দরকার নেই

– এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যেতে গেলে করাতে হবে না করোনা পরীক্ষা

– যেসব রোগীরা হোম আইসোলেশনের পর ছাড়া পেয়েছেন

– সংশোধিত নীতি অনুসারে যে রোগীদের কোভিড ফেসিলিটি থেকে ছাড়া হচ্ছে

উল্লেখ্য সোমবার ভারতে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৩ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। গত বছরের মে মাসের শেষের দিকের পর থেকে এটিই দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণ। দেশে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৭ লাখ ২৩ হাজার ৬১৯। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যাও। সোমবার যে ১ লাখ ৭৯ হাজার করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, তাঁদের মধ্যে ৪১০ জনের শরীরে ওমিক্রনের সন্ধান মিলেছে। দেশে এখনও পর্যন্ত মোট ২৭ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ওমিক্রনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। দেশে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজারের কিছু বেশি। সিকিম হল ভারতের একমাত্র রাজ্য যেখানে এখনও পর্যন্ত ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের আক্রান্ত কারও খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণে মারা গিয়েছেন ১৪৬ জন।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours