সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার জন্য রাহুল গান্ধীকে এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিকাশ সিং। তিনি বলেন, "রাহুল গান্ধীর উচিত দ্রুত উচ্চতর আদালতে তাঁর সাজা রদ করানোর আর্জি জানানো।"

Rahul Gandhi: রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্ত কি ভুল? কী বলছেন আইন বিশেষজ্ঞরা?রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হওয়া কি সঠিক?
নয়া দিল্লি: একটা বিতর্কিত মন্তব্য। আর তার জেরেই সর্বস্ব খোয়ালেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। মোদী পদবি (Modi Surname) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য় করায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী মানহানির মামলা (Criminal Defamation Case) করেছিলেন গুজরাটের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদী। বৃহস্পতিবার সুরাট আদালতের তরফে ওই মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গেই জামিন পাওয়ায় আপাতত রাহুলকে জেলে যেতে না হলেও শুক্রবারই নিজের সাংসদ পদ (MP Post) খুইয়েছেন। ছাড়তে হয়েছে সরকারি বাসভবনও। এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন কংগ্রেস বিরোধীদের একজোট করে বিক্ষোভ শুরু করার পরিকল্পনা করছে, সেখানেই কীভাবে রাহুলের সাংসদ পদ ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু করা হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, সাংসদ পদ ফিরে পেতে রাহুল গান্ধীর সামনে একটাই পথ খোলা রয়েছে। যদি তিনি আদালত থেকে ফৌজদারি মানহানি মামলায় রায় ও শান্তির সিদ্ধান্ত রদ করাতে পারেন, তবেই তিনি লোকসভার স্পিকারের কাছে সাংসদ পদ ফেরানোর আবেদন জানাতে পারবেন।

সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার জন্য রাহুল গান্ধীকে এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিকাশ সিং। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধীর উচিত দ্রুত উচ্চতর আদালতে তাঁর সাজা রদ করানোর আর্জি জানানো। নির্বাচন কমিশন কেরলের ওয়ানাডে, যেখান থেকে রাহুল গান্ধী সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন, সেই আসনে উপ-নির্বাচন ঘোষণার আগেই রাহুল গান্ধীকে আদালতে আবেদন জানাতে হবে। যদি কারাদণ্ডের আদেশের খারিজ বা তার উপরে স্থগিতাদেশ ঘোষণা করা হয়, তবে রাহুল গান্ধী সংসদে নিজের সদস্যপদ ফিরে পেতে পারেন। যদি তিনি জেলে না যান, তবে তার আসনে কোনও উপ-নির্বাচন হবে না।”

সংবিধান আইন বিশেষজ্ঞ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীর মতে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া বেআইনি, কারণ আদালতের তরফে তাকে ৩০ দিনের জামিন দেওয়া হয়েছে। তিনিও রাহুল গান্ধীকে দ্রুত উচ্চতর আদালতে আর্জি জানানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “যদি উনি উচ্চতর আদালত থেকে কারাদণ্ডের উপরে স্থগিতাদেশের নির্দেশ আনতে পারেন, তবে সাংসদ পদ খারিজের নির্দেশ বাতিল হয়ে যাবে। আমার মতে, যেহেতু সাজা এক মাসের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে, তাই রাহুলের সংসদে সদস্যপদ খারিজ করা বেআইনি।”

আইনজীবী বিকাশ সিংও জানান যে আইন অনুযায়ী রাহুল গান্ধীর সাংসদপদ খারিজ করার সিদ্ধান্ত ভুল। তিনি বলেন, “আইনে বলা হয়েছে দুই বছর অবধি সাজা হলে ছাড় মিলবে…আয়কর নিয়ে একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিল যে ওই নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত করলে তা শাস্তিযোগ্য হয়। এখানে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজে যে আইনের উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানেও লেখা আছে দুই বছর অবধি এবং তার বেশি…অর্থাৎ যে ব্যক্তিকে দুই বছর অবধি সাজা দেওয়া হয়েছে, তিনি সাংসদ পদ খোয়ানো থেকে রেহাই পাবেন। যদি তার বেশি শাস্তির মেয়াদ হয়, তবে তাঁর সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়া যাবে।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours