মঙ্গলবার 'ফিচ'-এর পক্ষ থেকে পাকিস্তানের দীর্ঘমেয়াদী বৈদেশিক মুদ্রার ঋণ খেলাপির রেটিং 'সিসিসি+' (CCC+) থেকে কমিয়ে 'সিসিসি-' করেছে। অর্থাৎ, এতদিন যাও বা পাকিস্তানের পক্ষে বৈদেশিক ঋণ শোধ করার সামান্য সম্ভাবনা ছিল, এখন তাও আর দেখা যাচ্ছে না।

চরম বিপর্যয়ের মুখে পাকিস্তান। গত কয়েক মাস ধরে ইতিহাসে সবথেকে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে গত বছর মারাত্মক বন্যা পাকিস্তানের অবস্থা আরও বেহাল করে দিয়েছে। ঋণ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পাকিস্তানের সামনে কড়া শর্ত দিয়েছে। যা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছে ইসলামাবাদ। কারণ তাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারও একেবারে তলানিতে। এই অবস্থায় পাকিস্তানের সামনে বড় মাপের ঋণ খেলাপির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এমনটাই পূর্বাভাস দিয়েছে আমেরিকার নিউইয়র্ক-ভিত্তিক বৈশ্বিক রেটিং সংস্থা ‘ফিচ’। সব মিলিয়ে দেউলিয়া হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান।



মঙ্গলবার ‘ফিচ’-এর পক্ষ থেকে পাকিস্তানের দীর্ঘমেয়াদী বৈদেশিক মুদ্রার ঋণ খেলাপির রেটিং ‘সিসিসি+’ (CCC+) থেকে কমিয়ে ‘সিসিসি-‘ করেছে। অর্থাৎ, এতদিন যাও বা পাকিস্তানের পক্ষে বৈদেশিক ঋণ শোধ করার সামান্য সম্ভাবনা ছিল, এখন তাও আর দেখা যাচ্ছে না। সংস্থাটি বলেছে, “আমাদের আশঙ্কা পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার নিম্ন স্তরেই থাকবে। যদিও আমরা প্রত্যাশিত বৈদেশির মুদ্রার প্রবাহ এবং সম্প্রতি এক্সচেঞ্জ রেট ক্যাপ অপসারণের ফলে ২০২৩ অর্থবর্ষের বাকি সময়ে পরিমিত হারে পাকিস্তানের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের পূর্বাভাসও দিয়েছি।” ফিচের আশা আইএমএফ প্রোগ্রামের নবম পর্যালোচনার পর, তাদের শর্ত পূরণে সফল হবে পাকিস্তান। তবে তারপরও ফিচ সতর্ক করে বলেছে, “আমাদের মতে, পাকিস্তানের ঋণ খেলাপির সম্ভাবনা ক্রমে বাড়ছে।”

ঋণ খেলাপি হলে পাকিস্তানের কী হবে? বিপুল পরিমাণ বাণিজ্যিক ঋণের বোঝা রয়েছে পাকিস্তানের ঘাড়ে। ঋণ খেলাপির অর্থ তারা এই বাণিজ্যিক ঋণ আংশিকভাবে বা পুরোটাই পরিশোধ করতে পারবে না। পাক সংবাদপত্র ‘ডন’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার এমন পর্যায়ে নেমে যায়, যে বাণিজ্যিক ঋণ খেলাপি হয়, তবে পাক সরকারের সামনে সেই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে বাণিজ্যিক ঋণদাতাদের ঋণ পরিশোধ করতে নিষেধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। মার্কিন ডলারের প্রবাহও কমে যাবে। ফলে, বিভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা তৈরি হবে। ফলে অর্থনৈতিক উৎপাদনের ক্ষতি হবে এবং মুল্যবৃদ্ধি চরম সীমায় পৌঁছবে। শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির কারণে, বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হবে। একটা বড় অংশের মানুষের হাতে খরচ করার মতো কোনও অর্থই থাকবে না। দেউলিয়া হয়ে যাবে দেশ।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours