আনলাকি থার্টিন নয়। ফেব্রুয়ারির ১৩ তারিখেই ঘুরে গেল ভাগ্যের চাকা। দিনমজুর থেকে হয়ে গেলেন কোটিপতি! লটারি কেটে রাতারাতি তাঁর স্বপ্নকে ছুঁয়ে ফেললেন ঝাড়গ্রামের পাকুরিয়াপাল গ্রামের বছর সাতাশের অনুপ মুন্যান। লটারিতে পুরস্কার পাওয়ার পর রাতে বাড়ির কাউকে কিছু বলেননি। সারারাত জেগে কাটিয়েছেন।সকাল হতেই সোজা কাজে না গিয়ে মানিকপাড়া পুলিশের বিট হাউসে চলে চলে যান তিনি।

ছোটবেলায় বাবা-মা প্রয়াত হয়েছেন। দাদা-বৌদি ও ভাইপো নিয়ে সংসার অনুপের। পেশায় বালি খাদানের দিন মজুর। দাদা শম্ভু মুন্যানও একই কাজ করেন। আর্থিক টানাপড়েনে অনুপের আর সংসার পাতা হয়নি। ঘরে লক্ষ্মী না আনতে পারলেও রবিবার রাতে টিকিট কেটে তাঁর লক্ষ্মী লাভ হয়েছে। কোটিপতির ঘোর এখনও কাটছে না তাঁর।

কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে বালি ঘাদানে না-গিয়ে তিনি সোজা হাজির হয়েছেন মানিকপাড়ায় পুলিশের বিট হাউসে। কে বলতে পারে, যদি টিকিটটা গায়েব করে দেও কেউ। পাকুরিয়াপাল গ্রামের অনুপের কোটিপতি হওয়ার ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এমনিতেই মাঝে মধ্যে লটারি কাটতেন অনুপ। কিন্তু কোনওদিন টাকা বাঁধেনি। রবিবার ১৩ ফ্রেবুয়ারি দু'বার লটারি কেটেছিলেন। দু'বারই ভাগ্য খুলেছে।

অনুপ মুন্যান বলেন, ''রবিবার সন্ধ্যায় মেউদিপুরে এক লটারি বিক্রেতার কাছ থেকে ৩০ টাকা ও ৬০ টাকা এবং খালশিউলি বাজারে আরেক লটারি বিক্রেতার কাছে ৩০ টাকা দিয়ে লটারি কিনেছিলাম। বাড়ি ফিরে রাতে মোবাইল খুলে ফলাফল দেখে অবাক হয়ে যাই। প্রথম লটারি বিক্রেতার কাছে ৩০ টাকা দিয়ে যে লটারি কেটেছিলাম, তাতে ১২৫০ টাকা পুরস্কার পেয়েছি। ৬০ টাকা দিয়ে যে লটারির টিকিট কিনেছিলাম তাতে এক কোটি টাকা জিতেছি।''

লটারিতে পুরস্কার পাওয়ার পর রাতে বাড়ির কাউকে কিছু বলেননি। অনুপ বলেন, ''সারারাত আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না, সত্যিই আমার এক কোটি টাকা লেগেছে কিনা? বার বার মোবাইলে লটারির নম্বরটি মিলিয়েছি। ঘুম আসেনি। সোমবার সকাল হতেই সোজা কাজে না গিয়ে মানিকপাড়া পুলিশের বিট হাউসে চলে এসেছি টিকিট নিয়ে।'' এত টাকা নিয়ে কি করবেন? অনুপ বলেন,''আমাদের বাড়ি নেই।

তাই যে টাকা আমি লটারিতে জিতেছি তা দিয়ে প্রথমে একটি পাকা বাড়ি বানাব। কিছু চাষের জমি কিনব। আর বাকি টাকা ব্যাঙ্কে জমা রাখব।'' ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া বিট হাউসের ওসি সিরজন হেমব্রমের কাছে গিয়ে নিজের নিরাপত্তা জন্য কিছুদিন থানায় থাকার কথা জানিয়েছেন অনুপ। ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার বিশ্বজিত্‍ ঘোষ বলেন, ''থানা তো মানুষের জন্যই। কিন্তু ব্যারাকে আমরা ওঁকে রাখতে পারব না। তবে তিনি যদি ক্যাম্পাস এলাকায় থাকতে চান থাকতে পারেন।''
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours