বাঁকানো ফ্রি কিক থেকে আবারও গোল করলেন লিওনেল মেসি। সেই সঙ্গে দুটি গোল করিয়ে আর্জেন্তিনাকে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে তুললেন মহাতারকা। নিজের লক্ষ্যের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনার সঙ্গে ব্যবধান কমালেন এলএম টেন। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হল ইকুয়েডরকে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ফ্রি কিক থেকে গোলের নিরিখে ইতিমধ্যেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে টপকে গিয়েছেন লিওনেল মেসি। কোপা এবং বিশ্বকাপে মোট ৬ বার ফ্রি কিক থেকে গোল করেছেন লিও। একই প্রেক্ষাপটে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর গোলসংখ্যা ৪। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ৭৫-এর মধ্যে ৫৮টি গোল বাঁকানো ফ্রি কক থেকেই করেছেন মেসি। এভাবে আর চারটি গোল করতে পারলেই মারাদোনাকে ধরে ফেলবেন এলএম টেন। সেদিকেই ধীরে ধীরে এগোচ্ছেন তিনি। যার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে মেসির খেলায়। গোইয়ানিয়ায় ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম একাদশে অ্যাঞ্জেল দি মারিয়া, সার্জিও আগুয়েরোকে রাখেননি আর্জেন্তিনা কোচ। লিওনেল মেসি, লাউতারো মার্তিনেজ ও নিকোলাস গঞ্জালেসকে সামনে খেলিয়ে ৪-৩-৩ ছকে দল সাজিয়েছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। ফলে ম্যাচের প্রথম থেকেই আক্রমণে উঠতে থাকে নীল-সাদা জার্সির দল। অন্যদিকে ৪-৩-৩ ছকে দল সাজিয়ে শুরুর দিকে আর্জেন্তিনাকে বেশ বেগ দিতে থাকে ইকুয়েডর। হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়রা একাধিকবার ঘাত-প্রতিঘাতে জড়িয়ে পড়েন। ফলে ফাউল এবং চোট-আঘাতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পাল্লা দিয়ে কার্ডও দেখাতে থাকেন রেফারি। তারই মধ্য অব্যাহত থাকে লিওনেল মেসি ক্যারিশমা। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের কড়া ট্যাকল ও মন্থর গতি এড়িয়ে গোল করার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন এলএম টেন। ২৮ মিনিটের মাথায় তাঁর শট বারে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচে চাপ বাড়াতে থাকে আর্জেন্তিনা। ৪০ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত একটি মুভ তৈরি করে নীল-সাদা জার্সির দল। মেসির ঠিকানা লেখা পাস থেকে সহজ গোল করেন মিডফিল্ডার রডরিগো দে পল। প্রথমার্ধেই সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ইকুয়েডর। সেগুলি তারা কাজে লাগাতে পারেনি। আরও গোল করের সুযোগ নষ্ট করেছে আর্জেন্তিনাও। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে লিওনেল মেসি শিবির। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে আরও চাপ বাড়াতে থাকে আর্জেন্তিনা। একাধিকবার গোল করার কাছেও পৌঁছে যায় লিওনেল মেসি শিবির। কিন্তু ইকুয়েডরের দিশাহীন ফুটবলে কিছুটা হলেও খেই হারাতে শুরু করে আর্জেন্তিনাও। ৭১ মিনিটের মাথায় অভিজ্ঞ দি মারিয়াকে নামান আর্জেন্তাইন কোচ। এরপরই খেলায় ফের গতি সঞ্চার হয়। ৮৪ মিনিটের মাথায় দি মারিয়া, মেসি যুগলবন্দিতে তৈরি বল থেকেই গোল করেন মার্তিনেজ। তবে ফাইনাল পাসটি বাড়ান সেই আর্জেন্তাইন অধিনায়কই। ৯০ মিনিটের মাথায় নিজেদের ডি বক্সের ঠিক বাইরে অ্যাঞ্জেল দি মারিয়াকে ফেলে দিয়ে দুটি হলুদ কার্ড দেখে মাঠের বাইরে যান ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পিয়েরো হিনকাপিয়ে। সেটপিস থেকে মেসির বাঁকানো শট গোলে যখন প্রবেশ করে, তখন আর্জেন্তিনার জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। শেষ বাঁশি বাজতেই শিশুর মতো উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন এলএম টেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours