এখন না হয় পরিস্থিতি একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছে। জনজীবন ফিরছে চেনা ছন্দে। কিন্তু লকডাউন যখন চলছিল, তখনই যে দেশের এবং বিশ্বের অর্থনীতি একটা বড় ধাক্কা খেয়েছে, তা সহজেই বলে দেওয়া যায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এবার যে খবর এল, তা মোটেও আশার কথা শোনাচ্ছে না।

২০২১-এর মধ্যে চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি হতে পারেন বিশ্বের ১৫০ মিলিয়ন মানুষ, হুঁশিয়ারি দিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। খবর আরও বলছে যে কোভিড পরবর্তী দুনিয়ায় অর্থনীতির ক্ষেত্রে একটি বড় রকমের পরিবর্তন আসবে। শ্রমিক, পুঁজি, লগ্নি-সব ক্ষেত্রেই বিপুল রদবদল হতে চলেছে।
ওয়াশিংটনের এক ঋণ দায়ী সংস্থা জানাচ্ছে, ইতিমধ্যেই ৮৮ থেকে ১১৫ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যের মুখোমুখি হয়েছেন যেটা পরের বছর ১৫০-তে গিয়ে দাঁড়াবে। অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থাই এর জন্য দায়ী। বিশ্ব ব্যাঙ্ক গ্রুপের সভাপতি ডেভিড মালপাস বলেছেন, মহামারী ও বিশ্ব মন্দার জন্য বিশ্বের জনসংখ্যার ১.৪ শতাংশেরও বেশি চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে পারে। তিনি বলেন, উন্নয়নের অগ্রগতি এবং দারিদ্র্য হ্রাসের এই মারাত্মক ধাক্কা ফিরিয়ে আনার জন্য দেশগুলিকে মূলধন, শ্রম, দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী নীতির উপরে গুরুত্ব দিতে হবে; নতুন ব্যবসা পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন এনে কোভিড পরবর্তী দুনিয়ায় একটি পৃথক অর্থনীতির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক বলেছে যে ২০৩০-এর মধ্যে তাদের যে লক্ষ্য ছিল অর্থাৎ বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য দূর করা, সেটা এত সহজে সম্ভব হবে না। এর কারণ হল যৌথভাবে কোভিড ও জলবায়ুর পরিবর্তন। ২০৩০-এ বিশ্ব দারিদ্র্যের হার দাঁড়াবে ৭%। ভারত থেকে সঠিক তথ্য না আসায় এই হার পরিমাপ করতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানায় বিশ্ব ব্যাঙ্ক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে বেশিরভাগ মধ্য-আয়ের দেশগুলি থেকেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোককে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে দেখা যাবে। প্রতিবেদনে এও অনুমান করা হয়েছে যে প্রায় ৮২ শতাংশ দরিদ্র মানুষ মধ্যম আয়ের দেশেই থাকবেন।

স্বাভাবিক! প্রথম বিশ্বের দেশগুলোতে দারিদ্র্যের হার তুলনামূলক ভাবে বরাবরই কম, ফলে সেখানকার অর্থনীতি পোক্ত হওয়ায় সমস্যার সঙ্গে লড়তে অসুবিধা হবে না। কিন্তু ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্ব কী ভাবে এই দারিদ্র্যের সংক্রমণ ঠেকায়, সেটাই এখন দেখার!
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours