মানুষ থেকে কুকুরের দেহে ছড়ালো মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ। এই প্রথম কোনও কুকুর আক্রান্ত হল মাঙ্কিপক্সে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এই রোগে আক্রান্তদের 'পোষ্য প্রাণীদের থেকে বিচ্ছিন্ন' হওয়ার পরামর্শ দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মানুষ থেকে কুকুরের দেহে ছড়ালো মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ! আর এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই বুধবার (১৭ অগস্ট) মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রাণীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’। গত সপ্তাহেই মেডিকেল জার্নাল, ‘দ্য ল্যানসেট’এর এক প্রতিবেদনে জানান হয়েছে, ফ্রান্সের প্যারিস শহরে একটি পোষ্য কুকুর মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত হয়েছে। দুই সমকামী ইতালীয় পুরুষের সঙ্গে একসঙ্গে বাস করে ওই গ্রেহাউন্ড কুকুরটি। ওই সমকামী পুরুষদের থেকেই কুকুরটির দেহে ছড়িয়েছে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এই রোগে আক্রান্তদের তাদের ‘পোষ্য প্রাণীদের থেকে বিচ্ছিন্ন’ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।


বুধবার, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মাঙ্কিপক্স বিষয়ক টেকনিক্যাল লিড রোসামুন্ড লুইস সাংবাদিকদের বলেছেন, “মানুষ থেকে প্রাণীতে সংক্রমণের এটি প্রথম ঘটনা। আমরা মনে করি কোনও ক্যানাইন (কুকুর প্রজাতির প্রাণী) এই প্রথম মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত হল।” প্রসঙ্গত, যখন কোনও ভাইরাস একটি প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতির দেহে সংক্রামিত হয়, তখন তাদের জিনগত গঠনের বিপজ্জনক পরিবর্তন হতে পারে বলে আশঙ্কা করে থাকেন বিজ্ঞানীরা। রোসামুন্ড লুইস জানিয়েছেন, তত্ত্বগতভাবে বিশেষজ্ঞরা এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে ভাইরাসের লাফের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। তবে, তা সত্যি সত্যি ঘটবে, এমনটা তারা ভাবেননি।

তবে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন ঘটেছে, এমন কোনও রিপোর্ট এখনও নেই বলেই জানিয়েছেন রোসামুন্ড লুইস। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, “ভাইরাসটি একটি ভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংক্রামিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এটির ভিন্নভাবে বিকশিত হওয়ার এবং ভিন্নভাবে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।” তিনি আরও জানিয়েছেন, মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত আছেন এমন বাড়ির ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’। নইলে বাড়ির বাইরে ইঁদুর এবং অন্যান্য প্রাণীদের সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। যা থেকে এই মহামারির পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ১৯৫৮ সালে ডেনমার্কে গবেষণাগারে রাখা বানরদের মধ্যে প্রথম এই ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছিল। সেখান থেকেই এই ভাইরাসের নাম হয়েছে মাঙ্কিপক্স। তবে, প্রায়শই ইঁদুর জাতীয় প্রাণীর দেহে এই ভাইরাস পাওয়া যায়।

‘হু’-এর জরুরী বিভাগের পরিচালক মাইকেল রায়ান জানিয়েছেন, ক্ষুদ্রতর স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে ভাইরাসটি সংক্রামিত হলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। একের পর এক প্রজাতির দেহে ভাইরাসটি সংক্রামিত হলে, ভাইরাসটির বিবর্তনও দ্রুত হয়। তবে, বাড়ির পোষ্য প্রাণীরা আক্রান্ত হলেও তাদের নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলেই দাবি করেছে ‘হু’। মাইকেল রায়ান বলেছেন, “একজন মানুষের থেকে একটি কুকুরের দেহে ভাইরাসটি আর দ্রুত বিকশিত হবে এটা আশা করা যায় না। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। পোষা প্রাণীদের অবশ্য কোনও ঝুঁকি নেই।”


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours