ভ্যাকসিনগুলি যে নকল, তা নাকি জানতেনই না তিনি! ভ্যাকসিন কেনার জন্য প্রথমে নাকি সিরাম ইন্সস্টিটিউটেই যোগাযোগ করেন তিনি। এক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন তাপস চট্টোপাধ্যায় নামে এক তৃণমূল নেতা। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে এত কম সংখ্যক ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়। তারপরই বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কেনেন তিনি। রাতভর জেরার পর তদন্তকারীদের এমনটাই জানিয়েছেন ভুয়ো টিকার (Kasba False Vaccination Camp) মূল চক্রী দেবাঞ্জন দেব (Debanjan Deb)। তাঁর কথার পরতে পরতেই রয়েছে ধাঁধা। দেবাঞ্জনের বক্তব্য, “ভ্যাকসিন যদি নকল হত জানতাম, তাহলে আমার মা আর মাসিকে কেন দিতাম?”

গত বছর করোনা কালে স্যানিটাইজারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন দেবাঞ্জন।

কিন্তু সেই স্যানিটাইজারও নকল। তদন্তে এমনটাই জানা গিয়েছে। তাঁর অফিস থেকে মেলা স্যানিটাইজারের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাতে ইথাইল অ্যালকোহল নেই। রয়েছে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। যা ঘরবাড়ির জীবানুমুক্ত করতে ব্যবহার করা হয়।

দেবাঞ্জনের অফিসের কম্পিউটারে মিলেছে নকল কোভিশিল্ড-এর লেবেল তৈরির গ্রাফিক্স। অর্থাত্‍ তার কম্পিউটারেই লেবেল ছাপানোর গ্রাফিক্স তৈরি করা হয়েছিল। তারপর তা বাইরে থেকে ছাপিয়ে এনে প্রত্যেকটি ইনজেকশনের শিশিরের ওপর সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

দেবাঞ্জনের অফিসের কম্পিউটার হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে। জেরায় দাবি করেছেন, এগুলি নকল কোভিশিল্ড সেটা তাঁর জানা ছিল না। যেখান থেকে সে এই ভ্যাকসিন কিনেছিলেন, তাঁরা কোভিশিল্ড বলেই বিক্রি করেছিলেন।

সূত্রের খবর, তাপস চট্টোপাধ্যায় নামে যে ব্যক্তির নাম দেবাঞ্জন করেছেন, তিনি রাজপুর-সোনারপুরের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। তার সাহায্যেই সিরাম ইন্সস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। অন্তত পুলিশের কাছে এমনটাই দাবি করেছেন দেবাঞ্জন। তাঁর আরও বক্তব্য, তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনই তাঁকে ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর কলকাতা পুরসভায় ২ লরি পিপিই কিট দেন তিনি। এখনও পর্যন্ত চার-পাঁচটা ক্যাম্প করতে পেরেছিলেন। গড়ে ২০০ জন করে এই নকল ভ্যাকসিন নিয়েছে সেখান থেকে। দেবাঞ্জনের কথায় একাধিক প্রভাবশালীর নাম উঠে আসঠে। তবে তাঁর বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে সন্ধিহান তদন্তকারীরা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours